লাল-রাজঘুঘু

আমাদের দেশে বেশ কয়েক প্রজাতির ঘুঘু আছে। এই পরিবারের পাখিগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এরা নিটোল শরীরের অধিকারী। মনে হয় কোনো কারিগর বিশেষ যত্ন নিয়ে তৈরি করেছেন। 

লাল-রাজঘুঘু একটি অত্যন্ত নয়নকাড়া ঘুঘু প্রজাতি। আকারে সর্বাধিক দৃশ্যমান তিলা-ঘুঘু থেকে ছোট। পুরুষটির শরীর লাল, মাথা নীল, ঘাড়ে কালো ব্যান্ড। স্ত্রীর বাদামি দেহ। পাখিটি দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ৯ ইঞ্চি, ওজন ১০৪ গ্রাম। ডানার প্রান্ত, লেজের উপরের পালক এবং ঠোঁট কালো, পা লাল। পাখিটির ইংরেজি নাম Red Turtle Dove.

এরা মাঠে-প্রান্তরে হেঁটে হেঁটে খাবার খুঁটে খায়। মূল খাদ্য বীজ। বন্য কুঁড়ি, নরম পাতা, শস্য এদের খাদ্য। লাল-রাজঘুঘু সাধারণত হালকা বনাঞ্চলে বসবাস করে থাকে। তিলা-ঘুঘুর মতো নাগরিক বাসিন্দা হয়ে ওঠেনি। তাই ঢাকা নগরীর ভেতরে এদের দেখা যায় না। কিন্তু একটু শহরতলিতে গেলেই এই মিষ্টি পাখিটিকে দেখতে পাওয়া যায়।

এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এদের প্রজননকাল। উঁচু গাছে পাতাঘেরা ডালের প্রান্তের দিকে কাঠি ও গাছের ডাল দিয়ে বাসা বানিয়ে থাকে। স্ত্রীটি সেখানে দুটি হালকা সাদা রঙের ডিম পাড়ে। বাচ্চা ফুটলে উভয়ে সেগুলোর যত্ন নেয়। ছানাগুলোকে শিশুকালে শস্যদুধ খাওয়ানো হয়। এই দুধ শস্য ও বীজ থেকে মা-বাবার উদরেই তৈরি হয়, যা তারা মুখের মাধ্যমে ছানাকে খাইয়ে দেয়। খাদ্যটি ব্যাপক পুষ্টিগুণে ভরপুর।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে লাল-রাজঘুঘুর বসবাস। প্রজাতিটি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়ার লক্ষণ অনুপস্থিত। সে কারণে আইইউসিএন পাখিটিকে বিলুপ্তি হুমকিমুক্ত মনে করে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //